ট্রেন টু পাকিস্তান-খুশবন্ত সিং

অনুবাদক : সুজন চৌধুরী

কাহিনী সংক্ষেপ :

১৯৪৭ সালে হিন্দু মুসলিমের ভিত্তিতে হওয়া দেশভাগের কারণে সারা ভারতবর্ষ যখন উত্তাল ঠিক সেই সময় পাঞ্জাবের এক গ্রামে তখনো খারাপের ছোঁয়া লাগেনি। সেই গ্রামের নাম মানো মাজরা।শিখ অধ্যুষিত মুসলমান সম্প্রদায়ের এই গ্রামের এক মুসলমান ঘরের মেয়ের নাম নুরান। নুরানের প্রেমে পড়ে একই গ্রামের জগুৎ সিং নামের এক শিখ যুবক।জগুৎ সিং পেশায় ছিল ডাকাত এমনকি তার বাবা আলম সিংও ছিলেন একজন ডাকাত।

নুরানের ভালবাসায় বিমোহিত জগুৎ সিং নিজ গ্রামে ডাকাতি ছেড়ে দেয়।কিন্তু একই গ্রামের হিন্দু জমিদার রামলাল এর বাড়িতে এক রাতে হামলা করে ডাকাত মাল্লী ও তার দলবল। জমিদারকে হত্যা করে সবকিছু ডাকাতি করে নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় সমস্ত দোষ জগুর উপর দেয়ার বন্দোবস্ত করে যায়।নির্দোষ জগু কে দেওয়া হয় জেলে।

এমন সময় এই গ্রামে আসেন বিলেতফেরত সমাজকর্মী ইকবাল সিং। কিন্তু তাকে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি।বরং তাকেও হাজতে দেওয়া হয়। এইভাবেই চলতে থাকে কিছুদিন।

যেই গ্রামের সবাই ট্রেনের হুইসেলকে ঘড়ি বিবেচনা করে দিন কাটাচ্ছিল,সেখানেই হঠাৎ ট্রেনের সময়ে অনিয়ম হতে লাগল।গ্রামবাসী ভাবল এই বুঝি কলিযুগ শুরু হল।তারা ভয়ংকর পরিস্থিতিতে সময় কাটাতে লাগল।পরবর্তীতে তারা বুঝতে পারল যে, এই ট্রেন আসলে লাশে বোঝাই।

হিংসা -প্রতিহিংসারা আগুনের ছোঁয়া লাগল মানো মাজারোতে।

পাঠ প্রতিক্রিয়া :

বইয়ের শুরুতে মূল চরিত্র নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম। তবে কাহিনীর মাঝেই লেখক সেই সংশয় দূর করে দিয়েছেন। বিক্ষুব্ধ সেই সময়ে বর্শা কিংবা বন্দুকের সামনে মানবিকতার অসহায় আত্মসমর্পণ প্রতিটা চরিত্রকেই প্রভাবিত করেছে। উপন্যাসের গতিশীলতার কারণে কাহিনী বেশ উপভোগ্য হয়েছিল। কিন্তু শেষের দিকে এসে কেমন যেন অসম্পূর্ণ মনে হলো, গল্পের পরিণতি না ঘটিয়েই যেন উপন্যাসের ইতি ঘটেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top